নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন প্রবেশমুখে পণ্যবাহী ট্রাকে চাঁদা আদায়কালে হাতেনাতে ২৫ জন চাঁদাবাজ গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১। রোববার ৪ ফেব্রুয়ারী ১৩ জন চাঁদাবাজকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদী কারাদন্ড প্রদান করে কারাগারে প্রেরণ ও ১২ জন চাঁদাবাজকে অর্থদন্ড প্রদান করা হয়েছে। এই সময় তাদের হেফাজত থেকে বিপুল পরিমাণ চাঁদাবাজির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
বিভিন্ন মেয়াদী কারাদন্ড প্রাপ্তরা হলো- মোঃ জুয়েল আহমেদ (৩০), মোঃ শফিকুল ইসলাম (২৭), আব্দুর রহমান (৩০), মোঃ আশরাফ উদ্দিন (৪০), খলিল (৪০), মোঃ ওমর ফারুক (২৮), মোঃ ওমর ফারুক (৪০), হাসান মাসুম (৪০), মোঃ বিপ্লব খান (২৯), মোঃ ফরহাদ (২৮), মোঃ আসিফ (২১), মোঃ আতিকুর রহমান (৪৫), মারুফ হোসেন (২৮) এবং অর্থদন্ড প্রাপ্তরা হলো, মোঃ কবির হোসেন (২৮), রানা (৩০), মোঃ রাজিব (৩০), দিপু (১৯), মোঃ সাদ্দাম হোসেন (১৮), মোঃ সুমন খান লাল (৩২), আব্দুর রহমান মুন্না (৪০), মোঃ সোহেল (৩৫), আল আমিন (৩৫), মোঃ ইকবাল (৪৫), মোঃ রকিবুল হাসান (২৬), মোঃ রাসেল (২৫)।
৫ ফেব্রুয়ারী সকালে র্যাব-১১ এর মিডিয়া অফিসার এএসপি সনদ বড়ুয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, প্রাথমিক তদন্ত সূত্রে জানা যায় যে, সম্প্রতি পণ্যবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজির কারণে অযৌক্তিক ও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। সড়ক-মহাসড়কে এসব বাড়তি খরচের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের। যার ফলে সবজির মৌসুমেও কমছে না সবজির দাম। পণ্য পরিবহণে চাঁদাবাজির ঘটনা মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়ায় এই সমস্যা সমাধানে চাঁদাবাজদের গ্রেফতারে নজরদারি বাড়ায় র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা নারায়ণগঞ্জের প্রবেশমুখে বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজি করে। তথাকথিত ইজারাদারদের নির্দেশে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রতি রাতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার ওপর অবস্থান নেয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা চাঁদা আদায়ের রশিদও দেয়। ড্রাইভাররা তাদের চাঁদা দিতে না চাইলে তাদের গাড়ি ভাঙচুর, ড্রাইভার-হেলপারকে মারধরসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এদের কাছে দূরপাল্লার পণ্যবাহী ট্রাক ড্রাইভাররা ও ব্যবসায়ীরা জিম্মি। এই বাড়তি খরচের ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এই প্রেক্ষিতে বর্ণিত অভিযুক্তদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১১, সিপিএসসি কোম্পানি, নারায়ণগঞ্জ এর একটি চৌকশ গোয়েন্দা টীম যথাযথ গুরুত্বের সাথে তাদের অবস্থান সনাক্ত পূর্বক গ্রেফতারের চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ৪ ফেব্রুয়ারী সড়কে সবজি ও অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাক থেকে অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকারী নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন প্রবেশমুখে পণ্যবাহী ট্রাকে চাঁদা আদায়কালে হাতেনাতে ২৫ জন চাঁদাবাজকে র্যাব-১১, সিপিএসসি ও সিপিসি-১, নারায়ণগঞ্জ এর আভিযানিক দল গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। যার মধ্যে ১৩ জন চাঁদাবাজকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদী কারাদণ্ড প্রদান করে কারাগারে প্রেরণ ও ১২ জন চাঁদাবাজকে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। সড়কে সবজি ও অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাক হতে অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ এর অভিযান চলমান থাকবে।